সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
আজ ২৮ জুলাই ঢাকায় সমাবেশ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। দুই দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনীতিও বেশ সরগরম। প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে ব্যাপক পরিসরে।
এদিকে ওই কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক কর্মী সমর্থক নিয়ে উপস্থিত হওয়ার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। ২৬ জুলাই চাষাড়া রাইফেল ক্লাবে তিনি কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন। এর আগে এদিন সকালে তিনি আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেন। শামীম ওসমানের অনুগামি নেতাকর্মীদের ভাষ্য মতে, এদিন তারা লক্ষাধিক লোক নিয়ে ঢাকার সমাবেশে যোগ দিবেন।
অন্যদিকে ঢাকার মহাসেবশ সফল করার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। বিগত কর্মসূচিগুলো থেকে অধিক সংখ্যক কর্মী সমর্থক নিয়ে ঢাকায় যাবেন তারা। দলটির তৃণমূলের দাবি, এদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ব্যানারে সর্বাধিক লোক ঢাকায় যাবে। সঠিক সংখ্যা ঠিক কত হবে তা তারা বলতে না পারলেও ইংগিত দিয়ে বলছেন, অতীতের যে কোনো সময়ের থেকে এদিন বেশি সংখ্যক লোক সমাগম হবে জেলা বিএনপির ব্যানারে।
সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীনদের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে নেতাকর্মীদের নিয়ে উপস্থিত থাকার জন্য শামীম ওসমানকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা পেয়েই তিনি আমেরিকা থেকে সকালের দিকে ঢাকায় ফিরে এসে বিকেলে নেতাকর্মীদের নিয়ে চাষাড়া রাইফেল ক্লাবে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ইউনিটের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের প্রত্যেককেই বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ঢাকার সমাবেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে তিনি নির্দেশনা দেন।
সূত্র আরও জানায়, শামীম ওসমান অনুগামি নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে ঢাকার সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এদিন ঢাকার পুরাতন বাণিজ্যমেলার মাঠে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের একটি অংশের নেতৃত্বে থাকবেন শামীম ওসমান। তিনি মিছিলের অগ্রভাগে থাকবেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে এই সাংসদ অনুগামিদের তথ্যে। শামীম ওসমান ছাড়াও এদিন সমাবেশে রূপগঞ্জ, সোনারগাঁও, আড়াইহাজার থেকেও পৃথক মিছিল ঢাকার সমাবেশে যোগ দিবে। এছাড়াও শহর থেকে আইভী অনুগামি নেতাকর্মীরাও সমাবেশে যোগ দিবেন বলে জানা গেছে।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি পৃথকভাবে পল্টনে বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ করেছে। তবে, এই দুই ব্যানারের বাইরেও তৈমূর আলম খন্দকার, মামুন মাহমুদ এবং সাবেক এমপি আবুল কালাম গ্রুপ পৃথক পৃথক ব্যানারে সমাবেশে যোগ দিবেন। ধারণা করা হচ্ছে সর্বসাকুল্যে নারায়ণগঞ্জ থেকে লক্ষাধিক লোক পল্টন সমাবেশে যোগ দিবেন।
তবে, এদিন আওয়ামী লীগের সমাবেশে যেহেতু শামীম ওসমানের নেতৃত্বে বড় একটি মিছিল যোগ দিবে, তাই নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে এ নিয়ে আলোচনা রয়েছে বেশ জোড়েসোড়েই। তবে, শামীম ওসমানের প্রতিদ্বন্দ্বী যেহেতু সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন তাই অনেকেই বলছেন, এদিন এই দুই নেতার শক্তি পরীক্ষা। এদিন শামীম ওসমান ও গিয়াসউদ্দিন নিজ নিজ দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে শো-ডাউন করবেন ঢাকার রাস্তায়। এই শো-ডাউনের মধ্য দিয়েই প্রমাণ হবে কে কত বেশি শক্তিশালী। কার পেছনে কর্মী সমর্থক বেশি। আগামী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তাদের এই শো-ডাউনের গুরুত্ব অনেক।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন একজন নেতা হিসেবে সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের বেশ পরিচিতি রয়েছে। শামীম ওসমানের বিপক্ষে সাহস করে কথা বলার মত আইভীর পাশাপাশি গিয়াসউদ্দিনকেই ধরা হয়। আবার শামীম ওসমান যদি বিএনপির কোনো নেতাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তাহলে তিনি গিয়াসউদ্দিনকেই গুরুত্ব দেন। তাকে নিয়েই তিনি সব থেকে বেশি সমালোচনা করেন। অনেকের মতে, শামীম ওসমান তার বিপরীতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গিয়াসউদ্দিনকেই মনে করেন। ইতোপূর্বে এই দুই নেতা ভোটের লড়াই নেমেছিলেন ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। সে নির্বাচনে গিয়াসউদ্দিনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন শামীম ওসমান। সে থেকে তারা একজন আরেকজনের কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত।